বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর এর উদ্যোগে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট এর সহযোগিতায় ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সিলেট জেলার শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে “সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের পতিত জমি আবাদ ও ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ওয়াহিদা আক্তার, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষিবিদ মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, পরিচালক, সরেজমিন উইং, ডিএই। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক জনাব এস এম শহীদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ ধান গবেষণার পরিচালক ড. খালেকুজ্জামান ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আবদুল্লা ইবনে ইউসুফ। অনুষ্ঠানে গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার জনাব আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সেচ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্রি,। এতে দেখানো হয় যে, বোরো মৌসুমে সেচের অভাবে সিলেট বিভাগে প্রায় ২৬ ভাগ জমি পতিত থাকে। এছাড়াও যেটুকুজমিতে আবাদ করা হয় সেখানে সেচের পানির অভাবে ফলন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। নদী-খাল খনন, ভূ-গর্ভস্থ পানিতে সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা করা, উন্নত সেচ বিতরণ পদ্ধতি স্থাপনের মাধ্যমে হাওর এলাকার ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও বিপুল পরিমাণ পতিত জমি আবাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব বলেন প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত নির্দেশনা “প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে” বাস্তবায়ন করতে সিলেট অঞ্চলে সেচের পানির অভাব দূর করতে হবে। কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, বিএডিসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। নদী-খাল খনন ও সেচ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সেচের পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করতে হবে। উন্নত সেচ বিতরণ ব্যবস্থার ব্যবহার বৃদ্ধি করে সেচের পানির অপচয় রোধ করতে হবে। তিনি বলেন গবেষকদের গবেষণা ফলাফলগুলিকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে হাওর এলাকায় গবেষণা কর্মকান্ড আরো জোড়দার করার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন এখন বিদেশ থেকে আমাদের চাল আমদানী করতে হয়না। আমাদের প্রচুর চাল মওজুদ আছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভূয়সী প্রসংশা করে বলেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ তাদের এলাকার চিত্র নখোদর্পনে রাখেন, অনায়াসে মাঠের তথ্য দিতে পারেন। এই স্মার্টনেস ধরে রাখতে হবে। কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- আপনারা যা খুশি আবাদ করেন কিন্তু জমি পতিত রাখা যাবেনা। পরে প্রধান অতিথি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বিসিএস(কৃষি) ক্যাডার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ৩দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন করেন।
গেষ্ট অব অনারের বক্তব্যে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার জনাব আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি বলেন সিলেট বিভাগ কৃষি উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেষ্ট হতে হবে এবং আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মোঃ শাহজাহান কবীর,মহাপরিচালক, ব্রিবলেন সিলেট এলাকার কৃষির উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অন্তরায় হলো সেচের পানির অভাব। সেচের পানির অভাব দূর করার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কাজ করছে। সুনামগঞ্জের কয়েকটি স্থানে শ্যালো টিউবওয়েল স্থাপনের মাধ্যমে সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে মাত্র ২-৪ টি সেচ দেয়ার মাধ্যমে কৃষকরা ধানের দ্বিগুণ ফলন পেয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে যেখানে যে উৎসের পানির প্রাপ্যতা রয়েছে কৃষকদের তা ব্যবহারের সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে। সেচ নিশ্চিত হলে কৃষকরা অন্যান্য পরিচর্যাগুলির প্রতিও যতশীল হবেন। এছাড়া ব্রি, অত্র অঞ্চলের উপযোগী উচ্চফলনশীল জাত সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সবাই একসাথে কাজ করলে এই এলাকায় অনেক পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিভিন্ন দপ্তর প্রধান; জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা; অতিরিক্ত উপপরিচালক; উপজেলা কৃষি অফিসার; কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার; কৃষি প্রকৌশলী; উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সার ও বীজ ডিলার, কৃষক প্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কর্মী ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাবৃন্দসহ মোট ৩৫০ জন।
আ.ন.ম বোরহান উদ্দিন ভূঞা, এআইসিও, কৃতসা, সিলেট
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS